রোজা আসতে আর সপ্তাহখানেক বাকি। এর মধ্যে আরেক দফা বেড়েছে চাল, ডাল, পেঁয়াজ রসূন, ছোলাসহ সবধরণের নিত্যপণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যধানে কিছু পণ্যের দাম ৫ থেকে ২০ টাকা বাড়লেও কিছু পণ্যের দাম দ্বিগুন হয়েছে। তবে দাম কমেছে সবজির। স্থির আছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দফায় দফায় বেড়েছে এসব নিত্যপণ্যের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শ্রমিক ও পরিবহন সংকটে পণ্যের সরবরাহ ঘাটতিতে দাম বাড়ছে। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ অনেক ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছেন। রাজধানীর মুগদা, খিলগাঁ, বাসাবো, গোপীবাগ ও কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চিকন মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৮ টাকা কেজি, গত সপ্তাহ যা ছিল ৫৬-৬৪ টাকা। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা। স্বর্ণা, বিআর-২৮, চায়না ইরি ইত্যাদি মোটা চাদের দাম ৪০-৫০ টাকা।
চালের চেয়ে বেশি বেড়েছে রমজানের অন্যান্য পণ্যের দাম। ছোলার দাম গতসপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০টাকা বেড়ে এখন ৮০ থেকে ৮৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মোটা মশুর ডালের দাম আরো এক দফা বেড়ে এখন ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। আর ছোটদানার মশুর ডাল এখন ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১১২ থকে ১২০ টাকা। ভোজ্যতেলের মধ্যে খোলা সয়াবিন স্থির আছে ৯৫টাকা লিটারে আর পাম ৭৫ টাকা লিটারে।
ভারা মৌসুমেও আরেক দফা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় ওঠেছে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদার দাম। সপ্তাহের ব্যধানে চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুন দামে। বাজারে এখন চায়না আদা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। দেশি আদা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি আগের সপ্তাহে যা ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। রসূন কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে এখন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, গাড়ি-ঘোড়া চলে না। গ্রামে হাটবাজার ঠিকমতো বসে না। পেঁয়াজের সরবরাহ কম। ভারত থেকে আমদানি নেই বললেই চলে। এসবই করোনার কারণে। কাজেই দামতো বাড়বেই।
করোনার প্রভাবে চাল, ডালের দাম দফায় দফায় বাড়লেও স্বস্তি আছে সবজিতে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ভেদে টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২৫, করলা ২০ থেকে ৪০, বরবটি ৪০ থেকে ৫০, শসা ২০ থেকে ৩০, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০, শিম ৩০ থেকে ৪০, গাজর ২০ থেকে ৩০, বেগুন ২০ থেকে ৪০, পটল ৪০ থেকে ৫০, ঝিঙা ৪০ থেকে ৫০, চিচিংগা ২০ থেকে ৩০, ঢেঁড়শ ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বাধাপকি ১৫ থেকে ২০ টাকা পিস।
আগের বাড়তি দাম ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ১০০ থেকে ১১০ টাকায় ব্রয়রার মুরগি ও ২২ থেকে ২৫ টাকা হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বাজারগুলোতে।