কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি: বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় এক নাগরিককে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছেন প্রাণ (আরএফএল) কোম্পানী কর্তৃপক্ষ। তার নাম প্রিয়লাল চন্দ্র বিশ্বাস (৩৮)। সে ভারতের ত্রিপুরা জেলার পরবাড়ি থানার প্রকাশ নগর গ্রামের ললিত চন্দ্র বিশ্বাস ও উষারানী বিশ্বাসের ছেলে।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে পরিচয় গোপন রেখে ভারতের ত্রিপুরার প্রিয় লাল বিশ্বাস কালীগঞ্জের পৌর এলাকার মুলগাঁও অবস্থিত প্রাণ (আরএফএল) কোম্পানীর এমএএল প্রশাসনিক বিভাগে পরিচ্ছন্নকর্মী (ক্লিনার) হিসেবে কাজ করে আসছে।
অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার অপরাধে প্রাণ কোম্পানীর কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং ১৭, তারিখ ৯/২/২০২০ইং। সোমবার দুপুরে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ প্রিয়লালকে আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মিজানুল হক ভারতীয় নাগরিক আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নরসিংদী জেলার বেলাব থানার চর কাসিমনগর গ্রামের বিচরণ বিশ্বাসের মেয়ে সুকন্যা রানী বিশ্বাসকে প্রিয়লাল বিশ্বাস ২০০৯ সালে বিয়ে করে। বিয়েটি হয় সুকন্যা রানীর মাসি জয়ন্তী রানীর বাড়ি ভারতের ত্রিপুরায়। ওই সালে সুকন্যা রানী অবৈধভাবে ভারতের ত্রিপুরা তার মাসির বাড়িতে বেড়াতে যান। মাসি জয়ন্তীর প্রতিবেশি ছিল প্রিয়লালের পরিবার-পরিজন। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে সুকন্যা আর প্রিয়লালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সুকন্যা তার স্বামী বাড়ি ভারতের ত্রিপুরা জেলার পরবাড়ি থানার প্রকাশ নগর গ্রামে বসবাস করতে থাকেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে ৮ বছরের পাপিয়া রানী নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
ওসি আরোও জানান, আর্থিক অভাব অনটনের কারণে ২০১৬ সালে প্রিয়লাল তার স্ত্রী ও কন্যা সন্তানকে নিয়ে অবৈধভাবে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে প্রিয়লাল তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে তার ভায়রা ভাইয়ের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়াচর থানার নাপিতের চর গ্রামে বসবাস করতে থাকেন। এর পর থেকে সে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে থাকে। ৬/৬/২০১৭ সালে কালীগঞ্জ পৌরসভার মুলগাঁও এলাকায় অবস্থিত প্রাণ(আরএফএল) ইন্ডাট্রিয়াল পার্কে পরিচ্ছন্নকর্মী (ক্লিনার) হিসাবে চাকরিতে যোগ দেন।
দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর সে প্রাণ কোম্পানীতে চাকরি করতে থাকেন। সে পরিবার নিয়ে মুলগাঁও এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে প্রাণে চাকরি করে যাচ্ছিল। গত ২৬/১/২০২০ তারিখে প্রাণের প্রজেক্ট ম্যানেজার সারোয়ার হোসেনের একটি মোবাইল চুরি হয়। চুরির ঘটনায় তাকে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করে কর্তৃপক্ষ। তখন তার আসল পরিচয় বের হয়ে আসে। সে তার ভায়রা ভাইয়ের ঠিকানায় যেই সব কাগজপত্র করে চাকরি করে যাচ্ছে, সেই ঠিকানা তার আসল না। তার বাড়ি ভারতের ত্রিপুরায়। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রিয়লাল বিশ্বাসকে প্রাণ কোম্পানী কর্তৃপক্ষ কালীগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন।