এক দিকে লকডাউন তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের ‘গোপনীয়তায়’ প্রশ্ন, অন্য দিকে দ্রুত লকডাউন তোলার হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে আগুনের মতো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। অস্বস্তির এই জোড়া ফলাই এখন বিঁধছে ব্রিটেন সরকারকে। এই অবস্থায় করোনা-অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিতে আগামী কাল থেকে দায়িত্বে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে এই আবহে তিনি যাতে ব্রেক্সিট নিয়ে তাড়াহুড়ো না-করেন, সে বিষয়ে আজই ব্রিটেনকে সতর্ক করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের এক ঘনিষ্ঠ কর্তা।
তবে তার আগেই আজ বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক র্যাব জানান, লকডাউন তোলার সম্ভাবনা নিয়ে সরকার ভাবনাচিন্তা করছে, তবে গোপনে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা খুব স্পর্শকাতর এবং বিপজ্জনক একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপে কোনও ভুলচুক হলে চলবে না।’’ বিদেশমন্ত্রীর আর্জি, ‘‘পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও অন্য সুরক্ষাবিধি মানার পাশাপাশি পরবর্তী ধাপে পা দেওয়ার জন্য আমরা যে প্রস্তুত, তা নিশ্চিত করতে যাবতীয় হোমওয়ার্ক করে রাখতে হবে।’’ ব্রিটেনে শুধু হাসপাতালগুলিতেই করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজারের বেশি মানুষের। বাড়ি, কেয়ার-হোম ও বৃদ্ধাবাস মেলালে সংখ্যাটা আরও বেশি। অর্থনীতির হালও ভয়ঙ্কর। গত সপ্তাহের তথ্য অনুযায়ী, ক্রেতার চাহিদা সর্বকালের তলানিতে। খুচরো বিক্রয় রেকর্ড মাত্রায় কমেছে। সরকারের ঋণও ক্রমশ বাড়ছে। কবে অর্থনীতি ছন্দে ফিরবে, তা জানতে চেয়ে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে।
এরই মধ্যে, ছ’সপ্তাহ বাদে আজ প্রথম স্পেনে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারল শিশুরা। করোনা-সংক্রমণের নিরিখে আমেরিকার পরেই দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশটিতে আজ রাস্তায় রাস্তায় শিশুদের কলকাকলি। স্পেন, ইটালি, ফ্রান্স— করোনায় মৃত্যুর নিরিখে ইউরোপে শীর্ষে থাকা এই তিন দেশের বাকি দু’টিও এখন ‘মুক্তির’ অপেক্ষায় দিন গুনছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ জানিয়েছেন, ১১ মে থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন উঠবে দেশ থেকে।
লকডাউন তোলার দাবিতে বিক্ষোভ দেখানোয় জার্মানিতে ১০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জমায়েতে বাধা দিতে গেলে শনিবার বার্লিনে সশস্ত্র রায়ট পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ লেগে যায় বিক্ষোভকারীদের।
‘সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করছি’ বা ‘আমরা জীবন ফিরে পেতে চাই’ লেখা পোস্টার হাতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। ‘ডেমোক্র্যাটিক রেজ়িস্ট্যান্স’ নামের একটি পত্রিকাও বিলি করেন। লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সারা বিশ্বের এমন ১২৭ জন চিকিৎসকের বক্তব্য রয়েছে পত্রিকাটিতে।
এ দিকে, রমজান উপলক্ষে মক্কা বাদ দিয়ে আজ থেকে বাকি সৌদিতে কার্ফু তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজা সলমন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কার্ফু থাকবে না। রমজানের ষষ্ঠ থেকে ২০তম দিন পর্যন্ত খোলা থাকবে মল ও দোকানপাট।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।