বিজ্ঞানীরা এ যাবতের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও শক্তিশালী এক সুপারনোভার সন্ধান পেয়েছেন। মহাকাশে আর কোথাও এমন শক্তিশালী সুপারনোভার সন্ধান আগে পাওয়া যায়নি।
বৃটেনের বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এই সুপারনোভার সন্ধান পান। এর অফিসিয়াল নাম দেয়া হয়েছে-এসএন২০১৬এপিএস। হাওয়াইয়ের প্যানোরেমিক সার্ভে টেলিস্কোপ ও র্যাপিড রেসপন্স সিস্টেমের মাধ্যমে ২০১৬ সালে এই সুপারনোভার সন্ধান পাওয়া যায় বলেই এর নামকরণ এমন করা হয়েছে। আমাদের পৃথিবী থেকে ৩.৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের এক গ্যালক্সিতে এই সুপারনোভার সন্ধান পাওয়া গেছে।
মহাকাশে বিশাল সব নক্ষত্র তাদের আয়ুষ্কালের শেষ দিকে বিরাট এক বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যায়, ওই অবস্থাটাকে সুপারনোভা বলে। নতুন সুপারনোভাটি নিয়ে এই গবেষণার মূল গবেষক, বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. ম্যাট নিকোল বলেছেন, ‘সুপারনোভাকে আমরা দুই ভাবে পরিমাপ করতে পারি- বিস্ফোরণের মোট শক্তি ও যে শক্তি আলো বা রেডিয়েশনের মাধ্যমে দেখা যায়। সাধারণ সুপারনোভায় রেডিয়েশন দেখা যায় মোট শক্তির ১ শতাংশ। কিন্তু এসএন২০১৬এপিএস এ সাধারণ সুপারনোভার চেয়ে ৫ গুণ বেশি রেডিয়েশন দেখতে পেয়েছি। কোনো সুপারনোভাকে এতো আলো বিচ্ছুরণ করতে আগে দেখিনি আমরা।’
নতুন এই সুপারনোভাটির বিষ্ফোরণ শক্তিও অন্য সব সুপারনোভার চেয়ে বেশি ছিল। এই গবেষণার সহকারী গবেষক নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ড. পিটার ব্লেনচার্ড বলেছেন, ‘প্রায় প্রতি রাতেই বিশাল সব গ্যালাক্সিতে অনেক সুপারনোভার সন্ধান পাই আমরা। তবে নতুন এই সুপারনোভাটি হঠাৎ করেই আমাদের দৃষ্টিতে আসে, এটার উজ্জ্বলতা শেষ হওয়ার আগে জানতে পারিনি তা কোন গ্যালাক্সিতে ছিল।’
গবেষক দল সুপারনোভাটিকে নাসা’র হাবল স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে দুই বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই পর্যবেক্ষণে তারা জানতে পেরেছেন সুপারনোভার পর্যায়ে আসার আগে ধ্বংসপ্রাপ্ত নক্ষত্রটির ভর আমাদের নক্ষত্র সূর্যের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি ছিল। সাধারণত যেসব সুপারনোভার সন্ধান পাওয়া যায়, সেগুলোর নক্ষত্রের ভর আমাদের সূর্যের চেয়ে ৮-১৫ গুণ বেশি থাকে।